শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫০ অপরাহ্ন
বরগুনা : বরগুনায় কিশোর হৃদয় হত্যার ন্যায় বিচার পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন হৃদয়ের পরিবার। রিফাত শরীফ হত্যা মামলার শিশু আসামিদের রায়ের দিন আদালত চত্ত্বরের কাছে একটি মানবন্ধন করে হৃদয়ের পরিবার ও স্বজনরা। এসময় তারা রিফাত হত্যার রায়ের মতো হৃদয় হত্যাকাণ্ডে জড়িতদেরও ফাঁসির দাবি জানান।
গত বছর ঈদের বিকেলে বরগুনার গোলবুনিয়া বল্ক ইয়ার্ডে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যায় হৃদয়। এ সময় পূর্বশত্রুতার পাশাপাশি হৃদয়ের সঙ্গে থাকা এক বান্ধবীকে এ হত্যা মামলার অভিযুক্তরা উত্ত্যক্ত করলে হৃদয় প্রতিবাদ করে। এতে দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হলে অভিযুক্তরা হৃদয়সহ তার বন্ধুদের পিটিয়ে আহত করে। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে গুরুতর আহত হৃদয়কে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সকালে মৃত্যুবরণ করে হৃদয়।
প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার এ দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এঘটনায় গতবছর ২৬ মে রাতে বরগুনা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত হৃদয়ের মা। মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৪-১৫ জনকে আসামি করা হয়। হৃদয় বরগুনা শহরের চরকলোনি এলাকার চাঁদশী সড়কের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। বরগুনা সরকারি টেক্সটাইল ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নিহত হৃদয়ের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত স্থানীয় প্রভাবশালী কিশোর গ্যাং ও সন্ত্রাসীদের কারনে মামলায় আমরা কোন সুযোগ সুবিধা পাচ্ছিনা। সরকারের কাছে আমার ছেলে হৃদয় হত্যায় জড়িতদের প্রত্যেকের ফাঁসি চাই।’ নিহত হৃদয়ের মা ফিরোজা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের প্রত্যেকের ফাঁসি চাই। আমার মতো করে যেন আর কোন মায়ের বুকের মানিক না হারায়। হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি হোক যেন কাউকে হত্যা করার আগে সন্ত্রাসীদের বুক কেপে ওঠে।’ হৃদয় হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনার সদর থানার পরিদর্শক সরোজিৎ কুমার ঘোষ বলেন, মামলার প্রধান আসামিসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত শেষ পর্যায়ে, শীগ্রই অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয়া হবে।